সময় চক্রের,
ভুলে যাওয়া অনেক স্মৃতি হঠাৎ যে একদিন চোখের সামনে ভেসে ওঠে
কোন গোপনে লুকিয়ে থাকা এই ছোট্ট ঘটনা,
ডায়েরির পাতায় লিখে রাখা অগুনতি লেখার মধ্যে একটা!
কোন এক শীতের সকালে বা গরমের পড়ন্ত বিকেলে লেখা কয়েকটা কথা,
যা আজ হারিয়ে গেছে কোথায়, কে জানে?
স্মৃতির মায়াজাল বুনতে বুনতে কোন কোনায় গিয়ে লুকিয়ে পড়েছে সেই ঘটনাটা!
সেই রাস্তায় কুড়িয়ে পাওয়া পেনটা,
কোন একদিন স্বযত্নে তুলে এনে রেখে দেওয়া,
মেলায় কেনা সেই খেলনা টা,
যেটা এক সময় ছিল ভীষণ প্রিয়!
হারিয়ে গেল সব একদিন,
কোনদিন পাবোনা কি ফিরে?
মনে পড়ে সেই বাবা মা এর হাত ধরে মেলায় যাওয়া,
সেখানে গিয়ে স্কুলের সেই বন্ধুর দেখা পাওয়া,
কই সে? কি করেছে এখন? ভালো আছে তো?
আমাকে মনে আছে কি তার?
বিভিন্ন প্রশ্ন ঘিরে ধরে আমায়!
গরমের ছুটির দুপুরে, সেই বাঁশিওয়ালার বাঁশির সুর,
দূর হতে দূরে শোনা যেত যা,
কতদিন শুনিনি সেই সুর,
কতদিন দেখিনি সেই মুখ,
এরকমই এক অলস দুপুরে হঠাৎ ভেসে ওঠে সেই মুখ,
কিন্তু আর শোনা যায়না সেই হারানো সুর!
পাশের বাড়ির সেই ছেলেটা,
যার গান শুনতাম প্রতি বিকেলে,
মনে হতো, যদি আমিও ওর মতো গাইতে পারতাম!
মুখটা আর মনে নেই তার,
ছেড়ে চলে গেছে তারা,
অনেক বছর হয়েছে পার,
গানের সেই সুর মাঝে মাঝে ভেসে ওঠে কানে,
মনটা হঠাৎ চলে যায় সেই গানের টানে!
স্কুলের বাইরে সেই যে লোকটা ফল নিয়ে বসত,
বা সেই ফুচকাওয়ালা,
যার ফুচকা লুকিয়ে লুকিয়ে খেতাম মা এর বারণ সত্ত্বেও!
তারা কি আজও বসে?
হঠাৎ মনে পড়ে তাদের কথা,
মনটা চঞ্চল হয়ে ওঠে!
হঠাৎ ভোর রাতে ঘুম ভেঙে গেলে,
বা বন্ধুদের আড্ডার মাঝে,
বা হয়তো কলেজের নানা কাজের ব্যস্ততায়,
হঠাৎ ফিরে ফিরে আসে স্মৃতির দল!
ছুটে চলে যাই সেই জগতে,
অনন্য সেই জগৎ: আমার শৈশব,
আমাদের শৈশব,
কারণ আমাদের ছোটবেলা তো একই!
ফিরে আসতে ইচ্ছে করেনা,
কিন্তু কালের নিয়মে ফিরেই আসি,
আমার খাটে,
বা ক্যান্টিনএর চেয়ারে,
সেই কাজের ব্যস্ততায়!
ঘুমে চোখ বুঁজে আসে আবার,
আড্ডাটা আবারও জমে ওঠে,
কাজেও মন বসে যায়,
কিছুক্ষনের কথাগুলো যেনো আবার মিলিন হয়ে ওঠে!
হারিয়ে যায় সবকিছুর মধ্যে,
হয়তো বা বালিশের কোনায় বা মনের গভীরে,
মন থেকে মুছে যায়না কোনোদিনই,
হয়তো বা মনে পরে যাবে আবার এক ভোরে!
~শীর্ষা গুপ্ত