Site icon Youth Ki Awaaz

এগিয়ে বাংলাঃ তফাৎ গড়ে দিলো যে প্রকল্পগুলি – ১

এগিয়ে বাংলা

২০১১ সালের পালাবদলের পর পশ্চিমবঙ্গে গঠিত হয় তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার, মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকেই বাংলায় আসে উন্নয়নের জোয়ার যা গত ৮ বছর ধরে এরাজ্যে থাকা মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করে চলেছে। রইলো কিছু প্রকল্পের বিবরণ যা বদলে দিয়েছে এ রাজ্যের চেহারা। আজ প্রথম কিস্তি।

১) কন্যাশ্রী

মূলত বাল্যবিবাহ রোধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে এই প্রকল্প চালু হয় ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর। রাজ্যের প্রায় ১৫,৫০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪৪ লক্ষ কিশোরীকে এই প্রকল্পের অধীনে আনা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বিয়ের আগে পর্যন্ত পড়াশোনা করলে ছাত্রীদের বিশেষ ‘ইনসেনটিভ’ দেওয়া হচ্ছে। এতে অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভধারণ ও শিশুর মৃত্যু রোধ করা গিয়েছে।

২) স্ববলম্বন

সমাজের প্রান্তিক, অসহায় মহিলা, যৌনকর্মী, নারীপাচার চক্র থেকে উদ্ধার হওয়া মহিলা, রূপান্তরকামী সম্প্রদায় এবং ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ও নৈতিক বিপদের সম্মুখীন মহিলাদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে অবশ্য বয়স ৪৫ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য। বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) অথবা কোম্পানির মাধ্যমে এই প্রকল্পটি রূপায়িত হচ্ছে। প্রশিক্ষণ প্রাপকেরা অউ বোঁ পে, ওয়াও মোমো, কোঠারি, প্যান্টালুন্স, প্রভৃতি বিভিন্ন জায়গায় সফলভাবে কাজ করছেন। ৩০ জন কন্যাশ্রীকে ব্রেইনওয়্যার-এর ব্যবস্থাপনায় এই স্ববলম্বন প্রকল্পের অধীন আনআর্মড সিকিউরিটি গার্ড-এর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৬জন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে।

৩) সবলা

২০১১ সালের জুলাই মাস থেকে চলছে এই প্রকল্প যার বিস্তৃতি রাজ্যের সাতটি জেলা- কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, মালদা, নদীয়া, কলকাতা এবং পুরুলিয়া। এই জেলাগুলিতে পাইলট ভিত্তিতে ১৪১টি আইসিডিএস প্রজেক্ট থেকে ২৯৪৪৪টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কিশোরী মেয়েদের জন্য চলছে সবলা প্রকল্পটি।  এই স্কীমটির উদ্দেশ্য ১১-১৮ বছর বয়সী মেয়েদের  স্বাস্থ্যগত ও পুষ্টিগত অবস্থার উন্নতি এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনে প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য করে তোলা। বর্তমানে প্রায় ১২.৭২ লক্ষ কিশোরী এই প্রকল্পের সুবিধাভুক্ত। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৪১ হাজার বিদ্যালয় বহির্ভূত ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরীদের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা/স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষিত ব্যক্তিদের (ভিটিপিএস) মাধ্যমে বিউটিশিয়ান, হস্তশিল্প, সেলাই, ছাপাখানা এবং ডাইং, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ-এর মতো বিভিন্ন পেশার বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

৪) সবুজ সাথী

২০১৫-১৬ সালে ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পটি ঘোষণা করা হয় যার উদ্দেশ্য ছিল নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে সাইকেল বিতরণ। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রায় ৭০ লক্ষ ছাত্রছাত্রী এই প্রকল্পে উপকৃত হয়েছে।

৫) খাদ্যসাথী

এই প্রকল্পে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারকে ২টাকা কিলো দরে চাল ও গম দেওয়া হয়। ‘খাদ্যসাথী’র আওতায় থাকা পরিবারের প্রত্যেকে মাসে সর্বাধিক ৫ কিলো চাল বা গম পেতে পারবেন। এপর্যন্ত রাজ্যের ৮.৮০ কোটি মানুষের কাছে এই প্রকল্প পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এর সাথে তাঁরা পেয়েছেন ডিজিটাল রেশন কার্ড। আরও ২৫ লক্ষ কার্ড বিতরণ করছে রাজ্য সরকার।

৬) আনন্দধারা

এই উদ্যোগের লক্ষ্য রাজ্যের আর্থিকভাবে দুর্বল নারীদের সংগঠিত করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে এক ব্যাপক গ্রামীণ দারিদ্র বিরোধী কার্যক্রম শুরু করা। ২০১২ সালের ১৭ই মে এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এই কর্মসূচীর অধীনে ২০১২-১৩ সালের ব্লক সংখ্যা ৩২ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫৮, গোষ্ঠীর সংখ্যা ৩.১৮ লক্ষ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪.৫৮ লক্ষ। ৩২৭৪.৯ লক্ষ টাকার লক্ষ্যমাত্রার সাপেক্ষে ব্যাঙ্ক থেকে প্রাপ্ত ঋণের পরিমাণ ৩৩২৯.৮১ লক্ষ টাকা (১০১.৬৮%)।

Exit mobile version